রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো শ্রীলঙ্কা রাজধানীতে ৩৪ চোরাই মোবাইলসহ চোরচক্রের সদস্য গ্রেপ্তার হোয়াটসঅ্যাপে স্লিপ গ্রহণ করবে হাইকোর্ট বেঞ্চ সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে সরকার, গ্রেপ্তারের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ দাবানলের মধ্যেই চলছে লুটপাট, কারফিউ জারি অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককেও হুমকির অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে সিরিয়ায় আসাদের ‘বিশ্বস্ত’ কর্মকর্তার প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড এবি পার্টির চেয়ারম্যান মঞ্জু ও সম্পাদক ফুয়াদ মাদুরোকে গ্রেপ্তারে আড়াই কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির ঘরে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পৌঁছেছেন জি-২০ প্রতিনিধিরা

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পৌঁছেছেন জি-২০ প্রতিনিধিরা

স্বদেশ ডেস্ক:

চীন ও পাকিস্তানের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে ভারত আয়োজিত একটি পর্যটন সভায় অংশ নিতে ২০টি দেশের প্রতিনিধি সোমবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পৌঁছেছেন।

২০১৯ সালে নয়াদিল্লি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটির আধা-স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার পর থেকে সোমবারের এই বৈঠকটি কাশ্মীরের প্রথম উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক ঘটনা।

সভায় প্রতিনিধিরা সবুজ পর্যটন এবং ভ্রমণ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।

সোমবার এই অঞ্চলের প্রধান শহর শ্রীনগরের রাস্তাগুলোকে পরিস্কার করা হয়েছে, বেশিরভাগ নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট অপসারণ করা হয়েছে বা জি-২০ সাইনবোর্ড দিয়ে তৈরি কিউবিকলের মতো নিরাপত্তা পোস্ট দিয়ে ছদ্মবেশ তৈরি করা হয়েছে, যার পিছনে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দাঁড়িয়ে আছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানের জন্য শত শত কর্মকর্তাকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, যেটিকে তারা ‘অদৃশ্য পুলিশিং’ বলে অভিহিত করেছেন।

বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিনিধি এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠকের পরে শহরের কেন্দ্রস্থলের দোকানগুলোও স্বাভাবিকের চেয়ে আগে খোলা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ সম্মেলনকেন্দ্রের প্রধান রাস্তা দিয়ে বেসামরিক যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে এবং শহরের অনেক স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।

সোমবারের এসব চিত্র শ্রীনগরের সাধারণ দিনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার চেয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত।

দেখা যায়, পানিতে রাবার বোটে টহলরত অভিজাত নৌ কমান্ডোদের সাথে শ্রীনগরের ডাল লেকের তীরে অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশে একটি বিশাল নিরাপত্তা কর্ডন স্থাপন করা হয়েছে।

শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি যেন জেগে উঠেছে, লেকসাইড কনভেনশন সেন্টারের দিকে যাওয়ার রাস্তা ও বিদ্যুতের খুঁটিগুলো ভারতের জাতীয় পতাকার রঙে আলোকিত করা হয়েছে।

জি-২০-এর জন্য ভারতের প্রধান সমন্বয়কারী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি অনন্য বৈঠকের আয়োজন করেছি।’

তিনি বলেন, এই বছরের শুরুর দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও গুজরাট রাজ্যে অনুষ্ঠিত আগের পর্যটন সভাগুলোর তুলনায় এই অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ বিদেশি প্রতিনিধি থাকবে।

গত সপ্তাহে ভারতের কাশ্মীরে জি-২০ সম্মেলন আয়োজন নিয়ে জাতিসঙ্ঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফার্নান্ড ডি ভারেনেস বলেছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরে যা চলছে, তার আন্তর্জাতিক অনুমোদনের জন্যই ভারত সেখানে জি-২০ সম্মেলন করতে চাইছে।

তিনি বলেন, এই সভার প্রতিনিধিরা ‘স্বাভাবিকতার মুখোশ’ পড়ে থাকবেন, অন্যদিকে এই অঞ্চলে ‘ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন’ অব্যাহত থাকবে।

জেনেভায় জাতিসঙ্ঘে ভারতের মিশন এই বিবৃতিটিকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘অযৌক্তিক অভিযোগ’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ভারতের পর্যটন সচিব অরবিন্দ সিং শনিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, বৈঠকটি ‘শুধু পর্যটনের জন্য তাদের (কাশ্মীরের) সম্ভাবনা প্রদর্শনের জন্য নয়, এছাড়া বিশ্ববাসীকে এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার সম্পর্কে জানানোও এর লক্ষ্য।’

এই অঞ্চলটি বিশ্বের সবচেয়ে সঙ্ঘাতময় সামরিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সাথে একীভূত হওয়ার চেষ্টা করে ১৯৮৯ সালে এই অঞ্চলে একটি সহিংস বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। ভারত নৃশংসভাবে এই বিদ্রোহের জবাব দিয়েছে এবং সংঘর্ষে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক, সেনা ও বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।

২০১৯ সালে নয়াদিল্লি সরাসরি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে ভারতের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পায়।

তারপর থেকে এই অঞ্চলের জনগণ এবং এর গণমাধ্যম অনেকাংশে চুপ হয়ে গেছে। কঠোর সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকটি বাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে এবং শতাধিক লোককে গ্রেপ্তার করেছে।

সরকার বলেছে, একটি ‘সন্ত্রাস ইকোসিস্টেম’ বন্ধ করার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন।

এছাড়া, কর্তৃপক্ষ নতুন নতুন আইনও প্রণয়ন করেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি নিয়ে গঠিত জি-২০-এর একটি রোলিং প্রেসিডেন্সি রয়েছে এবং প্রতিবছর বিভিন্ন সদস্য তাদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে। ভারত ২০২৩ সালে গ্রুপ পরিচালনা করছে।

ভারত ২০১৯ সালের সিদ্ধান্তের পর থেকে শান্তির প্রতীক হিসেবে কাশ্মীরে পর্যটনের প্রসার করছে। তবে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই অঞ্চলটি কয়েক দশক ধরে শুধুমাত্র একটি প্রধান অভ্যন্তরীণ পর্যটন গন্তব্য। লাখ লাখ দর্শনার্থী প্রতিবছর কাশ্মীরে আসেন এবং সর্বব্যাপী নিরাপত্তা চৌকি, সাঁজোয়া যান এবং টহলরত সৈন্যদের দ্বারা আবৃত এক অদ্ভুত শান্তি উপভোগ করেন!

কাশ্মীরের অর্থনীতির মূল ভিত্তি এখনও কৃষি, এই অঞ্চলের জিডিপিতে পর্যটন শিল্পের অবদান মাত্র ৭ ভাগ।

প্রতিবেশি চীন এই অনুষ্ঠানটি বয়কট করেছে এবং পাকিস্তান কাশ্মীরের শ্রীনগরে এই বৈঠক আয়োজনের জন্য নয়াদিল্লির নিন্দা করেছে।

উভয়ের যুক্তি, বিতর্কিত অঞ্চলে এই জাতীয় বৈঠক করা উচিত না।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে ভারত বলেছে, তারা (পাকিস্তান) জি-২০-এর সদস্য পর্যন্ত নয়, তাই তাদের এ ধরনের নিন্দা অবান্তর।

সূত্র : ইউএনবি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877